খেলোয়াড় প্রোফাইলঃ মাশরাফি বিন মর্তুজা।

খেলোয়াড় প্রোফাইলঃ মাশরাফি বিন মর্তুজা।

জন্ম: অক্টোবর ৫, ১৯৮৩( নড়াইল জেলা ) বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম বোলিং স্তম্ভ ও একদিনের আন্তর্জাতিকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তার ডাক নাম কৌশিক। তিনি একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার বোলিংয়ের ধরন ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলার।

টেস্ট ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয় মাশরাফির। ২০০১ সালে ৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েইমাশরাফি বিন মর্তুজা অভিষেক হয় “নড়াইল এক্সপ্রেস” নামে অভিহত মাশরাফির। ।বাংলাদেশের ৩১তম আর ১৯৯৯ সালের পর তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে জাতীয় দলে জায়গা পায় মাশরাফি। অনূর্ধ্ব ১৯ দলে থাকতেই নজর কারেন ওয়েস্ট ইন্ডিসের অ্যান্ডি রবার্টের। আর রবার্টের পরামর্শে জাতীয় দলে জায়গা পায় মাশরাফি। ২৩শে নভেম্বর ২০০১ সালে এই জিম্বাবুয়ের সাথেই তার ওয়ান ডে ম্যাচের অভিষেক হয়। অভিষেক ম্যাচে তার জাত চিনিয়ে দেয় মাশরাফি, টেস্ট অভিষেকে ১০৬ রানে ৪ উইকেট আর ওয়ান ডে তে ২৬ রানে ২ উইকেট নেয় বাংলাদেশের এই “ প্রিন্স অব হার্ট”। ও হ্যাঁ নড়াইল শহরের মানুষ ম্যাশকে “ প্রিন্স অব হার্ট” বলেও ডাকে। ২৮ শে নম্ভেবর ২০০৬ সালে টি-টুয়েন্টি ম্যাচে অভিষেক হয় মাশরাফির জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সবথেকে মজার বিষয় বর্তমান ক্রিকেটের তিন র্ফমেটে মাশরাফির অভিষেক হয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। আরও একটি মজার বিষয় হচ্ছে ম্যাশের সব অভিষেক ম্যাচই নম্ভেবর মাসে হয়।

ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে ভালো পেস বোলারের ঘাটতি ছিল। বাংলাদেশে মোহাম্মদ রফিকের মত আন্তর্জাতিক মানের স্পিনার থাকলেও উল্লেখযোগ্য কোন পেস বোলার ছিল না। মাশরাফি বাংলাদেশের সেই শূন্যস্থান পূরণ করেন। ২০০৬ ক্রিকেট পঞ্জিকাবর্ষে মাশরাফি ছিলেন একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় বিশ্বের সর্বাধিক উইকেট শিকারী। তিনি এসময় ৪৯টি উইকেট নিয়েছেন। মাশরাফি একজন মারকুটে ব্যাটসম্যান। ভারতের বিপক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় তিনি পরপর চার বলে ছক্কা পেটান। সেই ওভার থেকে তিনি ২৬ রান সংগ্রহ করেন যা কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানের জন্য এক ওভারে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।মাশরাফি বিন মর্তুজা

২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ২৬ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেয় মাশরাফির, যা তার সেরা বোলিং সাফল্য। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের হয়ে প্রথমবারের মত অধিনায়কত্ব করার দ্বায়িত্ব্য পায় মাশরাফি। আর সেই বছরই জুন হাঁটুর চোটে মাঠ ছাড়ে মাশরাফি। তারপর বাংলাদেশ দলের দ্বায়িত্ব্য পায় সাকিব অল হাসান। ২০১০ সালের ফ্রেবরুয়ারি পর্যন্ত দলের বাইরে থাকে মাশরাফি বিন মর্তুজা। তারপর থেকে একের পর এক চোট আর খেলা নিয়ে ২০১৪ সালে আবার দ্বিতীয়বারের মত জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব পায় মাশরাফি। ২০১৫ সালে ওয়ার্ড কাপ দলের ক্যাপ্টিনের দ্বায়িত্ব পালন করেন তিনি।

 

২০০১ সালে অভিষেকের পর থেকে ১৫ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৩৬ টেস্টে ৭৮ উইকেট নিয়েছে ম্যাশ। টেস্টে সেরা বোলিং ৬০ রান দিয়ে ৪ উইকেট। সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ ২০০৯ সালে পাকিস্থানের বিপক্ষে। ১৬১টি ওয়ান্ডে ম্যাচ ২০৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। ওয়ান ডে তে সেরা বোলিং ২৬ রানে৬ উইকেট। আর টি-টুয়েন্টিতে ৪৯ ম্যাচে ৩৮ উইকেট নেয় মাশরাফি। সেরা টি-টুয়েন্টি বোলিং ১৯ রানে ৪ উইকেট। টেস্টে ৭৯৭ রান, বেষ্ট ৭৯. ওয়ান ডে ১৪৩৬ রান, বেষ্ট ৫১*. টি-টুয়েন্টি ৩৬৬ রান, বেষ্ট ৩৬ রান। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সফল অধিনায়ক এই মাশরাফি। টানা ৬টি সিরিজ জয়ের রেকর্ডও গড়লেন কৌশিক।

এটা ছিল এখন পর্যন্ত মাশরাফির ক্রিকেট ক্যারিয়ার ইতিহাস।

১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ১১ বার চোটের কারণে দলের বাইরে যেতে হয়েছে মাশরাফিকে। চোটই তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ২০১১ সালের দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। চোটের কারণে অপারেশন টেবিলে তাকে যেতে হয়েছে সাতবার। এরপরও দেশকে ভালোবেসে খেলে যাচ্ছেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম নির্ভীক এই ক্রিকেটার। এমন খেলোয়াড়কে মুখে বলে নয় সম্মানের সাথে দাড়িয়ে সালাম জানাতে হয়।