দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও সতর্কতামূলক বিষয় হিসেবে আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে মাঠে নামবে সেনাবাহিনী। বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে।জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তার জন্য তারা নিয়োজিত থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে তারা (সেনাবাহিনী সদস্যরা) জেলা ও বিভাগীয় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে। সেনাবাহিনী বিশেষ করে বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের কেউ নির্ধারিত কোয়ারেন্টিনে বাধ্যতামূলক সময় পালনে ত্রুটি/অবহেলার করছে কি না তা পর্যালোচনা কবরে। জেলা ম্যাজেস্ট্রেটরা এ জন্য স্থানীয় সেনা কমান্ডারের কাছে সেনাবাহিনীর কর্তৃক অবস্থা পর্যালোচনা জন্য আইন অনুসারে অনুরোধ জানাবেন।
সোমবার বিকালে করোনাভাইরাস নিয়ে সচিবালয়ে জরুরি ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
সচিবালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আজ সোমবার এ ধরণের মোট ১০টি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, তথ্যসচিব, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (পিআইও) ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ দফার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
১০ সিদ্ধান্তের মধ্য রয়েছে গণপরিবহন চলাচল সীমিত রাখা, সবরকম সামাজিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে নিম্ন আয়ের কোনো ব্যক্তি শহরে জীবন যাপনে অক্ষম হলে সরকার তাঁকে ঘরে ফেরা কর্মসূচির অধীনে নিজ গ্রাম বা ঘরে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকেরা ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে করোনা ভাইরাসের কারণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে দেওয়া হয়। উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। পয়লা এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সকল সরকারি অফিস ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।সাধারণ ছুটির সময়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
এর আগে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পুলিশ ও হাসপাতাল ছাড়া সব ধরনের সরকারি সেবা বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২৬ মার্চ সরকারি ছুটি, এর সঙ্গে ২৭-২৮ তারিখ সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। এর সঙ্গে ২৯ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। ৩-৪ এপ্রিল আবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। তবে ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার সব খোলা থাকবে।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে মহামারী আকারে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। এ ছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ৯৯ হাজার মানুষ।
বাংলাদেশে এই পর্যন্ত ৩ জন এ রোগে মৃত্যুবরণ করেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ জন।