তারল্য ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঋণ বিতরণের অভিযোগে ফারমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীমকে অপসারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ (১) ধারা অনুযায়ী, অপসারণের চিঠি পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চিঠি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যদিয়ে অপসারণ কার্যকর হয়েছে। অবশ্য এমডির চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী ২৮ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা সাংবাদিকদের জানান, ফারমার্স ব্যাংকের এমডি এ কে এম শামীমকে অপসারণে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সকালে ব্যাংকটি সেই চিঠি গ্রহণ করেছে।
নানা অনিয়মে সম্পৃক্ততার দায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে এর আগে গত ২৭ নভেম্বর ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী। অনিয়ম করে দেওয়া ঋণ ফেরত না আসায় ব্যাংকটি ব্যাপক তারল্য সংকটে পড়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর এ কে এম শামীমকে এমডির পদ থেকে কেন অপসারণ করা হবে না- জানতে চেয়ে নোটিশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় গত ১৩ ডিসেম্বর তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসানের নেতৃত্বে এমডিদের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্থায়ী কমিটির মুখোমুখি করা হয়। কমিটি সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে তাকে অপসারণের বিষয়ে গভর্নরের কাছে সুপারিশ করে। সুপরিশের পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর তাতে সায় দিয়েছেন। আগামী ৩১ ডিসেম্বর এ কে এম শামীমের ৬৫ বছর পূর্ণ হবে।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে স্থায়ী কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে যে কোনো ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ গত ৬ ডিসেম্বর এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের এমডি দেওয়ান মুজিবুর রহমানকে অপসারণ করা হয়। এর আগে গত বছরের ৩০ জুন অগ্রণী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ আবদুল হামিদ এবং ২০১৪ সালের ২৫ মে বেসিক ব্যাংকের এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়।
কার্যক্রম শুরুর অল্প দিনেই নানা অনিয়মের জড়িয়ে পড়ায় ব্যাংক আলোচিত নতুন প্রজন্মের ফারমার্স ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক। ব্যাংক দু’টির অনিয়ম শিওরে ওঠার মতো বলে সাম্প্রতিক এক বৈঠক শেষে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড়. আব্দুর রাজ্জাক। ফারমার্স ও এনআরবিসি পুরো আর্থিক খাতে পদ্ধতিগত ঝুঁকি তৈরী করছে বলেও ওই বৈঠকে জানানো হয়।