সুস্মিতা সেন:আমি বহুমুখী হয়ে বাঁচব

সুস্মিতা সেন:আমি বহুমুখী হয়ে বাঁচব

র‌্যাম্প ‍হিসেবে প্রথম পরিচিতি । বলিউডে সিঙ্গল মাদারের তালিকায় তার নাম প্রথমে নিজের শর্তে জীবনযাপনের আরেক নাম সুস্মিতা সেন। সম্প্রতি কলকাতা শহরে এসেছিলেন একটি ফ্যাশন শোয়ের শো-স্টপার হয়ে। সাংবাদিকদের কাছে সাক্ষাৎকারের শুরুতেই শর্ত রাখা হলো প্রেম, বিয়ে, ব্যক্তিজীবন নিয়ে তাকে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। অথচ ইনস্টাগ্রাম খুললেই প্রেমিক রহমান শলের সঙ্গে তার ওয়ার্ক আউটের ভিডিও চোখ এড়িয়ে যায় না। এমনকি সম্প্রতি মেদ ঝরানো, ছিপছিপে চেহারার সুস্মিতা যে টেবিলে বসে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন, তার অদূরেই সোফায় বসেছিলেন খোদ রহমান। শোয়ে দর্শক আসনে, বাইট দেয়ার সময়ে সুস্মিতার চেয়ে খানিক দূরে সর্বত্রই দেখা গেল প্রেমিক প্রবরকে। অগত্যা প্রশ্ন না করে থাকতে পারলেন না সাংবাদিকরা!

বিয়ে করেননি কথাটা শেষ করতে না দিয়ে সুস্মিতা শুধরে দিলেনএখনো অবধি বিয়ে করিনি।’ ‘এখনোশব্দটার ওপরে এত জোর দিলেন অভিনেত্রী, মনে হলো এই বছরেই তাকে কনের সাজে দেখা যেতে পারে। বলিউডে কান পাতলে তেমন গুঞ্জন অবশ্য শোনাই যাচ্ছে। তবে এতদিন বিয়ে করেননি কেন? সংসারী হতে ভয় পান? সাংবাদিকের চোখে চোখ রেখে এক গাল হেসে বললেন, ‘এখনো অবধি নিজের গর্ভে সন্তান ধারণ করিনি। তা বলে বাচ্চা তো ভয় পাই না!’

গত বছর সুস্মিতার আইকনিক গানদিলবার দিলবার’-এর নতুন ভার্সনে নেচে ঝড় তুলেছিলেন নোরা ফাতেহি। কিন্তু নোরা কি তার উচ্চতা ছুঁতে পেরেছেন? বললেন, ‘এটাই আমরা ভুল করি। সব কিছুর তুলনায় চলে যাই। দুটো গানের পরিবেশন সম্পূর্ণ আলাদা। আমার গানে বেলি ডান্স ছিল না। নতুন ভার্সনে নোরা খুব ভালো বেলি ডান্স করেছে। তবে আমার মতে, যে কোনো ক্রিয়েটিভ এক্সপ্রেশন স্বতন্ত্র। অতীত বা ভবিষ্যতের কারো সঙ্গে এর তুলনা চলে না। আমি খুব খুশি, নতুন প্রজন্মের কাছে এই গানকে নতুনভাবে তুলে ধরার জন্য।

মডেল, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মেন্টর হিসেবে সুস্মিতার যে নামডাক, অভিনয়ের ক্যারিয়ারে সেই সাফল্য পাননি তিনি। ছবির ক্ষেত্রে যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে কি আপনি খুশি? জোর গলায় বললেন, ‘যা করেছি, তার এতটুকুও বদলাতে চাই না। আসলে আমাদের জীবন অনেক কিছুর সমষ্টি। তার মধ্যে রয়েছে সম্পর্ক, ক্যারিয়ার, সামাজিক কর্তব্য আবার নিজের প্রতি দায়িত্বও। অনেকেই একমুখী জীবনে বাঁচেন, সেটা তাদের পছন্দ। কিন্তু প্রথম থেকেই আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম, আমি বহুমুখী হয়ে বাঁচব। অনেক কিছু করতে গিয়ে কোনোটা ক্লিক করে, কোনোটা নয়। কিন্তু আমি আমার সাফল্য বা ব্যর্থতা তা দিয়ে মাপি না। আমার ছবি না- চলতে পারে, তা বলে আমি ব্যর্থ নই।

যে তার র‌্যাম্প  পরিচিতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সেখানেই ফিরে ফিরে পাওয়া যায় তাকে।ষোলো বছর বয়সে প্রথম র‌্যাম্পে হেঁটেছিলাম। সেটাই ছিল লাইভ দর্শকের সঙ্গে আমার প্রথম যোগসূত্র স্থাপন। আমি এখন ৪৩। যতবার র‌্যাম্পে ফিরি, সেই ষোড়শীর এনার্জি অনুভব করি। আর এটায় কিন্তু কোনো এডিটিং বা কারেকশন নেই। নিজের পরিচিতির গর্ব নিয়ে যখন কেউ ্যাম্পে হাঁটেন, তার মুখে-চোখে আলাদা ঔজ্জ্বল্য ধরা পড়ে,’ বললেন সাবেক বিশ্বসুন্দরী।

সুস্মিতা বরাবরই চেনা ছকের বাইরে। দুই মেয়ে রেনে আর আলিশা তার সর্বক্ষণের সঙ্গী। কথায় কথায় জানালেন, বড় মেয়ে রেনেও গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে চান। সে ক্ষেত্রে তার সুপারমমের চেয়ে ভালো মেন্টর যে আর কেউ হবেন না, তা নিঃসন্দেহে বলাই যায়।