জগদীশ চন্দ্র বসু

 জগদীশ চন্দ্র বসু

সবর্প্রথম উদ্ভিদে প্রাণের অস্তিত্ব অনুভব করেছিলেন তিনি হলেন বাংলাদেশের প্রথম আধুনিক বিজ্ঞানী এবং বাংলার গর্ব আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু।

১৯০০ সালের আগে বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু শুধুমাত্র পদার্থবিজ্ঞান নিয়েই গবেষণা করতেন। এক পযার্য়ে পদার্থ বিজ্ঞানের পাশাপাশি তার জীব বিজ্ঞানের প্রতিও তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণার এক পযার্য়ে তার মনে হলো, বিদ্যূত প্রবাহে উদ্ভিদও উত্তেজনা অনুভব করে এবং সাড়া দিতে পারে। সাড়া দেবার মতো ক্ষমতা শুধু প্রানীর আছে এ কথাটি সত্য নয়, উদ্ভিদও সাড়া দিতে পারে। অর্থ্যাৎ, উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে।

১৯০১ সালের ৬ জুন বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু রয়েল সোসাইটির এক সেমিনারে বক্তৃতা দেন। বক্তৃতার বিষয়বস্তু,- অজৈব বস্তুর বৈদ্যুতিক সাড়া’(Electric Response of Inorganic Substances)। পরের বছর ২০ মার্চ তিনি লিনিয়াস সোসাইটির এক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। এবারে সরাসরি উদ্ভিদের কথা বলা হয়। সেমিনারের বিষয় ছিল- ‘যান্ত্রিক উত্তেজনায় সাধারন উদ্ভিদের বৈদ্যূতিক সাড়া’(Electric Response in Ordinary Plants Under Mechanical Stimulus)। বিভিন্ন অবস্থায় উদ্ভিদ কেমন সাড়া দেয় তা দেখার জন্য বিজ্ঞানী বসু গাজর, মূলা, বাদাম, শালগম, বেগুন, ফুলকপি সহ বেশ কয়েকটি উদ্ভিদ নিয়ে গবেষনা করেন। উদ্ভিদের বৈদ্যুতিক সাড়া এবং বৃদ্ধির পরিমান নির্নয় করার জন্য তিনি একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন যার নাম অনুরণন মাপক(Resonant Recorder)।

১৯১০ সালের দিকে বিজ্ঞানী বসু তার গবেষণার পূর্ণাঙ্গ ফলাফল একটি বই আকারে প্রকাশ করেন। বইটির নাম ‘জীব ও জড়ের সাড়া’(Response in the Living and Non-Living)। আর এভাবেই জগদীশ চন্দ্র বসু সমগ্র বিশ্বে সামনে তুলে ধরেন একটি শ্বাশত সত্য, ‘উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে”

জগদীশ চন্দ্র বসু

একজন সফল বাঙালি বিজ্ঞানী। জগদীশ চন্দ্র বসু বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে ১৮৫৮ সালের ৩০শে নভেম্বর তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারের প্রকৃত বাসস্থান ছিল বর্তমান বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত বিক্রমপুর নামক স্থানের রাঢ়িখাল গ্রামে। তার বাবা ভগবান চন্দ্র বসু তখন ফরিদপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। এর আগে তিনি ১৮৫৩ থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

জগদীশ চন্দ্র ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বাংলা ভাষায় ছোটদের বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য জগদীশ চন্দ্র ‘অব্যক্ত’ নামে একটা বই লিখেছিলেন। জগদীশ চন্দ্র বসু ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ব্যক্তি, যিনি আমেরিকান প্যাটেন্টের অধিকারী। ২০০৪ সালের এপ্রিলে বিবিসি রেডিওর জরিপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে সপ্তম স্থান অধিকার করেন।

মৃত্যু ২৩ নভেম্বর ১৯৩৭ গিরিডি, ঝারখণ্ড।