স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারী চাকরীতে কোটা বৈষম্য

স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারী চাকরীতে কোটা বৈষম্য

মতামতঃ  কোটা সংশোধন আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরেই চলছে, কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী এই বিষয়ে মতামত জানিয়ে স্ট্যাটাস দিতেও বলেছে” কিন্তু আমি কোন বিষয়ে আগে নিজে না বুঝে লিখিনা । কোটা সংশোধন আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকটা ছোট ভাই প্রায় কয়েকদিন যাবৎ আহবান করতেছে লিখতে, একজন কে জিজ্ঞেস করলাম কোটা সংশোধন বলতে তোমাদের মুল দাবী কি মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল?

নাকি সব কোটা কমিয়ে, কোটার পরিমান কমানো?

সে বললো তাদের মুল দাবী সব কোটার পরিমান কমানো।

ছাত্রলীগের স্কুল কমিটির বিপক্ষে যখন আমি অবস্থান নিয়েছিলাম তখনো অনেকেই অনুরোধ করেছিলো ৫৬% কোটার বিরুদ্ধে লিখতে। যাহোক মুল বক্তব্যে আসি। যদি ৫৬% কোটা থাকার যৌক্তিকতা বলি, তাহলে অশিক্ষিত শ্রমিক, রিক্সাওয়ালা, দিনমজুর ও বলবে এটা অন্যায়। শুধু অন্যায় বললে ভুল হবে,চরম বৈষম্য ! ১০০% মধ্যে ৫৬% কিভাবে কোটা হয় এটা আমার কোনমতেই বোধগম্য নয়!

সম্ভবত কোন পাগলেও তা সাপোর্ট করবেনা।

যে বৈষম্যের ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো সেই বৈষম্য স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও বিদ্যমান থাকতে পারেনা।

৫৬% কোটা মানে আমাদের জনসংখ্যার বেশিরভাগ অংশটুকু অযোগ্য প্রমান করে।  কিন্তু আসলেই কি তাই?

দেশ এখন অনেক উন্নত, শিক্ষার হার, খাদ্য সমস্যা, বিদ্যুৎ সব কিছুর ঘাটতি পুরন করে দেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ।

এমনকি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় এখন তেমন মঙ্গাও নাই।

নারীরা এগিয়ে এসেছে, দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে। তাহলে কেন এখনো কোটার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশে থাকবো? মুক্তিযোদ্ধা কোটা অবশ্যই থাকবে,  মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কে সমুন্নত রাখতে,ছেলে মেয়ে নাতি, প্রয়োজনে ১৪ জেনারেশন পর্যন্ত থাকতে পারে” যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই দেশ তাদের মর্যাদা অবশ্যই আলাদা থাকা উচিৎ। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। যার বাবা মুক্তিযোদ্ধা সে সুযোগ আমার চেয়ে অবশ্যই বেশি পাওয়া উচিৎ। তাই বলে ৩০% কোটা কোনভাবেই কাম্য নয়!

মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানের শোষণ, বৈষম্য, নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে দেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু একটি স্বাধীন দেশে মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের ও বেশি কোটা যা ৫৬% তা আমি মনে করি,মুক্তিযুদ্ধের চেতনার,এবং আদর্শ বিরোধী।

১% উপজাতির জন্য ৫% কোটা কি হাস্যকর নাকি বুক ফাটা কষ্টের তা উপলব্ধি করতে পারছিনা।

আমার জানা মতে, এবং দেখা অনেক শিক্ষিত মেয়ে এই নারী কোটার জন্য অপমানবোধ করে। কেননা নারীরা এখন অনেক এগিয়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বিভাগ ছিলো সমাজবিজ্ঞান। পড়াশোনায় যারা এগিয়ে ছিলো তারা বেশিরভাগই মেয়ে।

আমি মনে করিনা মেয়েদের জন্য ৫% কোটার দরকার আছে?

এখানেও কমানো উচিৎ। জেলা কোটা কমিয়ে আনা উচিৎ,জেলা কোটা একেবারেই না থাকলে বেশি ভাল হয় । কেননা বর্তমানে বাংলাদেশে তেমন অবহেলিত জেলা নাই। এই ক্ষেত্রে একটা কোটা বাড়িয়ে দেয়া যায় সেটা হলো প্রতিবন্ধী কোটা।

কেননা আমরা যারা সুস্থ যে কোন উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারি। কিন্তু যারা প্রতিবন্ধী তারা আমাদেরই সন্তান।

এদেশের নাগরিক। তাদের কে এগিয়ে দিতে তাদের জন্য কোটা বাড়ানো উচিৎ।

কোটা সংস্কার অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয় তাই বেশি লিখে কাব্য বানানোর প্রয়োজন নাই।এদেশের উন্নয়ন, দেশ স্বাধীন তথা ৫২ ভাষা আন্দোলন সব কিছুর সাথে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অবদান জড়িত।তাই আওয়ামী পরিবারের কর্মী হিসেবে আশা নয়,বিশ্বাস নিয়ে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই কোটার সংশোধন করে, তরুন প্রজন্ম কে বৈষম্যের হাত থেকে বাঁচানো উচিৎ।

আমার মতে ৫৬% কোটা কমিয়ে, কমপক্ষে তিন ভাগের এক ভাগ কোটা করা হোক।

অর্থাৎ আপাতত বেশি কমানো না হলেও ৩৩% কোটা রাখা। যেটা আমাদের শিক্ষা জীবনের ১০০ নাম্বারের মধ্যে পাশ মার্ক নির্নয় করা হতো। আশা করি বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে জাতিকে বৈষম্যের হাত থেকে বাঁচানো হবে।

উল্লেখ্য যে আমার সরকারী চাকরীর বয়স নাই। এমনকি ইচ্ছেও নাই। আমার ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ নাই। যা লিখেছি, দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যা করলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বৈষম্য মুক্ত হয়ে এগিয়ে যাবে তাই প্রস্তাব করেছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

 

লিখেছেনঃ

এইচ এম আল আমিন আহমেদ,

সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক,

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়।

 

সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক

কবি জসীম উদদীন হল ছাত্রলীগ।

 

সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক,

বীরগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ।

 

সাবেক কর্মী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ।