ঐতিহ্যবাহী পৌষসংক্রান্তির মাছের মেলা

ঐতিহ্যবাহী পৌষসংক্রান্তির মাছের মেলা

হবিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পইলের মাছের মেলা জমে উঠেছে। প্রতি বছর পৌষসংক্রান্তিতে এ মেলার আয়োজন করা হয়। প্রায় দুই শ’ বছর যাবত এ মাছের মেলার আয়োজন করে আসছে পইল গ্রামবাসী। এ বছর একটি বোয়াল মাছের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬০ হাজার টাকা। মাছ ব্যবসায়ী আব্দুন নুর এ মাছটি বাজারে তুলেছেন। ওজন প্রায় ৩৫ কেজি।

আব্দুন নুর জানান, ২০-২৫ হাজার টাকা দাম হচ্ছে সকাল থেকেই। তবে কাক্সিক্ষত মূল্য না পেলে তিনি মাছটি বিক্রি করবেন না। গত বছর পইলের মাছের মেলায় একটি বাঘাআইড় মাছ বিক্রি হয়েছিল ৪০ হাজার টাকায়। হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা এ মেলায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। মেলা উপলক্ষে পইল ইউনিয়নজুড়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করে।

স্বজনরা এ উপলক্ষে বেড়াতে আসেন এই এলাকায়। মাছের মেলা উপলক্ষে স্বজন বন্ধু-বান্ধবকে মাছ কিনে উপহার দেয়ার রীতি এ এলাকার মানুষের। মাছের মেলা হলেও মেলায় বসেছে আরও প্রায় ২ শ’ দোকান। রয়েছে ফার্নিচারের দোকানও। ১ দিনের মেলাটি ৩ দিনে করার জন্য বেশ কয়েক বছর যাবত দাবি জানিয়ে আসছে স্থানীয়রা।

মাছ বিক্রেতা সমুজ আলী জানান, এখানে বিষমুক্ত মাছ বিক্রি করা হয়। মাছের মধ্যে সবকটি নদী ও হাওরের। সেখানে পুকুরে চাষের মাছ বিক্রি করা হয় না বললেই চলে। পইল গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, এ বছর বড় আকারের বাঘাআইড় মাছ উঠেনি। কারণ হিসাবে তিনি জানান, পলি মাটি পড়ে হাওর সংকুচিত হয়ে আসছে, নদী তীরে বসতবাড়ি স্থাপন করা হচ্ছে, নদীর গতিবেগ নেই, ফলে মাছ বড় হওয়ার সুযোগ দিন দিন কমে আসছে।

পইল ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মইনুল হক আরিফ জানান, ২ শ’ বছর যাবত এ মেলা চলে আসছে। পইলের মাছের মেলা এ এলাকার একটি ঐতিহ্য। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন জানান, মেলায় প্রচুর হাওরের মাছ উঠে। একটু দাম হলেও মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে মাছ কিনে থাকে।