টাকায় কেন লেখা থাকে ‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’

টাকায় কেন লেখা থাকে ‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’

‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’। টাকার গায়ে এই কথাটি সবাই লক্ষ্য করে থাকবেন। কিন্তু কখনো চিন্তা করেছেন কি, কেন টাকার নোটে লেখা থাকে চাহিবামাত্র ইহার বাহককে /১০/২০/৫০/১০০/৫০০/১০০০ টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে?

এই প্রশ্নের উত্তর খুব সোজা। এজন্য আপনাকে অর্থনীতিবিদ হতে হবে না। তবে জানতে হবে এর পেছনের কথা।

আমরা জানি বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপার একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কথা হলো এই মুদ্রা আসলে কী? মুদ্রা বলতে কী বোঝায় সেই সম্পর্কে একটু ধারনা রাখা ভালো।

বাংলাদেশের সরকারি মুদ্রা হলো ৩ টি। ১, ২, ৫ টাকার নোট কিংবা কয়েন হলো সরকারি মুদ্রা আর বাকিগুলো হলো সমপরিমাণ টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ছাপানো বিল অব এক্সচেঞ্জ।

বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার বিপরীতে নোট ছাপে। তাই এটা বাংলাদেশের জনগণের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়।

মনে করুন, আপনি কোন কারণে ব্যাংক নোটের উপরে আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই আপনি ১০০ টাকার একটি নোট বাংলাদেশ ব্যাংক কাউন্টারে জমা দিয়ে বিনিময় চাইলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক চাহিবামাত্র এর বাহককে অর্থাৎ আপনাকে সমপরিমাণ ১, ২, ৫ টাকা প্রদান করে দায় থেকে মুক্তি হবে। এই হচ্ছে মূল বিষয়।

আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন কোন নোট বাজারে ছাড়ে তখনই সমপরিমাণ ১,২, ৫ টাকার নোট বা কয়েন সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে নিয়ে নেয়। আবার যখন ১,২, ৫ টাকা মার্কেটে ছাড়ে তখনই সমপরিমাণ নোট সরকারি অ্যাকাউন্টে জমা দেয়। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের নিকট থেকে টাকা নিয়ে টাকা ছাড়ে। সে হিসেবে মার্কেটে যত টাকার নোট আছে ঠিক সমপরিমাণ টাকা (১ ও ২) বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত আছে। সুতরাং সব নোট ব্যাংকে জমা করলেও ১,২, ৫ টাকার কয়েন/ নোট দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

১,২,৫ টাকা হলো টাকা বাকিগুলো বিল অব এক্সচেঞ্জ Bill of Exchange. আর এজন্য এই নোটে লেখা থাকে না ‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’। বাকি নোটগুলোয় ঠিকই লেখা থাকে।..

প্রত্যেকটা ব্যাংকের নোট ইস্যু করে স্বর্ণ মুদ্রার বিপরীতে।
যত টাকা নোট ইস্যু করা হবে ঠিক তত স্বর্ণ বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষণ করা থাকবে।
চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে এই কথার মানে হলো
আপনি যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আপনার নোট নিয়ে যান তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক আপনার নোট এর বিপরীতে সমপরিমাণ স্বর্ণ বা আর্থিক সম্পদ দিতে বাধ্য থাকিবে।