চাকরি শেষে অনলাইনে পেনশন দিতে স্বতন্ত্র কার্যালয় হচ্ছে

চাকরি শেষে অনলাইনে পেনশন দিতে স্বতন্ত্র কার্যালয় হচ্ছে

সরকারি চাকরিজীবীদের চাকরি শেষে অনলাইনে পেনশন ও ভবিষ্যৎ তহবিল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য স্বতন্ত্র কার্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। কার্যালয়টির নাম হবে ‘কেন্দ্রীয় পেনশন ও ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অফিস’। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, চাকরি শেষে সরকারি চাকরিজীবীরা প্রাপ্য বিভিন্ন পাওনা তুলতে গিয়ে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। উৎকোচ ছাড়া পেনশনের টাকা তুলতে পেরেছেন এমন কোনো নজির নেই। এ ধরনের হয়রানির শিকার অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান সচিব পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর তাদেরকেও মুখোমুখি হতে হয়েছে। যুগ যুগ ধরে এ ব্যবস্থা চললেও কোনো সময় এ হয়রানি বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এই প্রথম হয়রানিমুক্ত পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ‘কেন্দ্রীয় পেনশন ও ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অফিস’ সিজিএর আওতায় থাকবে। প্রাথমিকভাবে এই কার্যালয়ের জন্য ১৭৬ জন বিভিন্ন গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এই কার্যালয়ের জন্য লোকবল নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ বেসামরিক পেনশনভোগী রয়েছেন। এই পেনশনারদের মাসিক পেনশন ও অন্যান্য অবসরকালীন সুবিধা বর্তমানে বিভিন্ন হিসাবরক্ষণ অফিস, ব্যাংক এবং পোস্ট অফিস কর্তৃক পরিশোধ করা হচ্ছে। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। একইভাবে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর ভবিষ্যৎ তহবিল হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের আওতাধীন হিসাবরক্ষণ অফিসসমূহে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে ইতোমধ্যে একটি সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ অফিস অথবা রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় গিয়ে পেনশনের অর্থ উত্তোলন করা প্রবীণ পেনশনারদের জন্য কষ্টকর। অন্যদিকে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের হিসাব সংরক্ষণ করে উক্ত তহবিলের ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ অবস্থায় পেনশনারদের অর্থ তাদের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে অনলাইনে স্থানান্তর করা অবশ্যক।

সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের পেনশন খাতের বরাদ্দ অর্থ বিভাগে স্থানান্তরপূর্বক প্রদর্শন করা হয়েছে। এ বাস্তবতায় সিজিএর বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোতে যথাযথ সেবা প্রদান দুরূহ হবে। সে কারণে প্রশাসনিকভাবে সিজিএ অফিসের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পৃথক কেন্দ্রীয় পেনশন ও ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অফিসের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, এই অফিস প্রতিষ্ঠার জন্য হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে অস্থায়ীভাবে লোকবল নিয়োগের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। চিফ কন্ট্রোলারসহ মোট ২৪টি ক্যাটাগরিতে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৭৬টি পদ সৃষ্টির অনুরোধ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।