যে কারণে জামিন পেলেন খালেদা জিয়া

যে কারণে জামিন পেলেন খালেদা জিয়া

বয়সজনিত অসুস্থতাসহ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিন আদেশে আদালত বলেন, এলসিআর (নিম্ন আদালতের নথি) এসেছে, কিন্তু আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত হয়নি। এ সুবিধা তিনি (খালেদা জিয়া) পেতে পারেন।

 

খালেদা জিয়া ট্রায়াল ফেস করেছেন। তিনি জামিনে ছিলেন এবং এর অপব্যবহার করেননি। তিনি বয়স্ক, বয়সজনিত শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনায় নিয়ে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে বলেও আদেশে উল্লেখ করেন আদালত।

 

জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে সোমবার (১২ মার্চ) দুপুরে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিনের এ আদেশ দেন।

 

আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটনি জেনারেল মাহবুবে আলম, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

 

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি এই চারমাসের মধ্যে পেপারবুকে আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত হতেও নির্দেশ দিয়েছেন।

 

রোববার (১১ মার্চ) জামিনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকলেও মামলার নথি এসে উচ্চ আদালতে না পৌঁছায় তা একদিন পিছিয়ে সোমবার দিন ধার্য করা হয়।

 

এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদার আইনজীবীদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। সেদিন খালেদার জরিমানা স্থগিত করে বিচারিক আদালতের নথি ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ দেন।

 

এরপর জামিন আবেদনের শুনানি শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের যে নথি ১৫ দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে; সে নথি আসার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর আদেশের সময় নির্ধারণ করেছিলেন।

 

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট  বেঞ্চে নথি নিয়ে আদালতের আদেশের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে খালেদার আইনজীবীরা একটি মেনশন স্লিপসহ আবেদন উপস্থাপন করেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদাপুত্র ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে দণ্ড দেওয়া হয়।

 

রায় ঘোষণার ১১দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি এ আবেদন দায়ের করেন।

 

সাজা ঘোষণার পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।