প্রোফাইল: জিৎ

প্রোফাইল: জিৎ

জিৎ (ইংরেজি: Jeet) বা জিতেন্দ্র মদনানী ভারতের বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের একজন বিখ্যাত অভিনেতা। তিনি ২০০২ সালে তার অভিনীত সাথী ছবির জন্য বি.এফ.জে.এ সবচেয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ অভিনেতা-এর পুরস্কার পান। এই ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্যও লাভ করে। তিনি স্টার জলসা পরিবার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন, টিভি শো কোটি টাকার বাজি রিয়েলিটি শো-এ সঞ্চালক হওয়ার জন্য। তিনি টলিউডের সর্বোচ্চ হিট ছবিতে অভিনয়ের গৌরব অর্জন করেন। ঐ ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছবি হলঃ সাথী, জোশ, শত্রু, দুই পৃথিবী, ফাইটার, "পাওয়ার,"বচ্চন","১০০% লাভ, এবং ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রেকর্ড করা ছবি আওয়ারা। তিনি ২০১২ সালের আনন্দলোক অ্যাওয়ার্ড পান এই আওয়ারা ছবিতে অভিনয়ের জন্য। বর্তমানে তিনি বাংলা ছবির অন্যতম সুপারস্টার।

 

তিনি প্রথমে সেন্ট জোসেফ এন্ড মারি স্কুল, নিউ আলিপুর ও পরে ন্যাশনাল হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃক পরিচালিত ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজ হতে গ্রাজুয়েট হন। পরে তিনি তার পরিবারের ব্যবসায় যোগদান করেন। তবে সৃজনশীল কাজের প্রতি তার বরাবরই উৎসাহ ছিল। মাঝেমধ্যে তিনি বিখ্যাত অভিনেতাদের অভিনয় অনুকরন করার চেষ্টা করতেন। তার বন্ধু রাজেশ চৌধুরী সৃজনশীল দুনিয়ায় তার ভাগ্য পরীক্ষা করতে বলেন।

 

এরপর তিনি বিভিন্ন কাজে যোগদান করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন সিরিয়ালে যেমনঃ বিষবৃক্ষ-এ তারাচরণ চরিত্রে, জননী-এ অনিল চরিত্রে সহ আরো কিছু সিরিয়ালে অভিনয় করেন। এরপর তিনি মুম্বাই যান এবং তার উদ্দেশ্যে কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই পাঁচ বছর সেখানে থাকেন।

 

ছুটিতে কলকাতায় আসার পর তিনি বিভিন্ন পরিচালক ও প্রযোজকদের সাথে দেখা করেন। এরপর তিনি প্রসেনিয়াম আর্ট সেন্টার নামক এক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হন। এই প্রতিষ্ঠানে তিনি বিভিন্ন ইংরেজি নাটকে অভিনয় করেন যেমনঃ আর্মস অ্যান্ড দ্য ম্যান, ম্যান অ্যাট দ্য ফ্লোর। তারপর তিনি আবার মুম্বাই যান এবং এক তেলেগু ছবিতে অভিনয় করেন। ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির নাম ছিল চাঁদু এবং পরিচালক ছিল দক্ষিণ ভারতীয়। এই ছবিটি তেমন কোন পরিচয় তাকে এনে দিতে পারল না, যা তিনি আশা করেছিলেন।

 

২০০১ সালের অক্টোবরে তিনি আবার কলকাতায় আসেন এবং পরিচালক হারানাথ চক্রবর্তীর কাছ থেকে দেখা করার প্রস্তাব পান এন.টি.ওয়ান. স্টুডিওতে। তার কাছ থেকে তিনি ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সাথী ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান এবং এই ছবির দৃশ্যায়ন শুরু হয় ১৫ জানুয়ারি, ২০০২ থেকে। এই ছবি জিৎকে বাংলা ছবির জগতে এক বিশেষ স্থান করে দেয়। তার স্বাভাবিক কিন্তু ভাষাসমৃদ্ধ অভিনয় দ্রুতই তাকে বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে স্থান করে দেয়। যদিও তিনি রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন, ক্রমশ তিনি একজন অ্যাকশন হিরো হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৫ সালে থামস্‌ আপ-এর এক বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে তিনি আরো সুপরিচিত হন। ২০১২ সালে তিনি একজন সফল প্রযোজক হিসেবে সমাদৃত হন, তার অভিনীত ১০০% লাভ ছবিতে প্রযোজনার মাধ্যমে। তার পরের ছবি আওয়ারা আগের অনেক রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড করে। তার নতুন ছবি আসছে ২০১৩ সালে। এর মধ্যে শ্রাবন্তীর বিপরীতে অভিনীত দিওয়ানা এবং শুভশ্রী গাঙ্গুলীর বিপরীতে অভিনীত বস ছবি বেশ উল্লেখযোগ্য। বস ছবিটি ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মহেশ বাবুর পরিচালিত ব্লকবাস্টার তেলেগু ছবি বিজন্যাসম্যান ছবির পুনর্নির্মান। এই ছবিটি বাবা যাদব- এর পরিচালনা ও রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্ট- এর প্রযোজনায় মুক্তি পায়।

 

ব্যক্তিজীবন

তিনি ২৪শে জানুয়ারি ২০১১ সালে এক স্কুলশিক্ষক মোহনা রতলানীকে বিয়ে করেন। তিনি ১২ই ডিসেম্বর, ২০১২ সালে এক কন্যা সন্তানের জনক হন। মেয়ের নাম নবন্যা।

 

চলচ্চিত্র

তিনি ২০০২ সালে প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদীর বিপরীতে সাথী ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। ভারত-বাংলাদেশের অংশগ্রহণে যৌথ প্রযোজনায় অভিনিত একাধিক চলচ্চিত্র রয়েছে। বাংলাদেশের প্রয়াত অভিনেতা মান্না অভিনীত আম্মাজান ছবিটি তাঁর প্রিয়।