প্রোফাইল: জেফ বেজোস

প্রোফাইল: জেফ বেজোস

জেফরি প্রেস্টন জেফ বেজোস একজন মার্কিন ইন্টারনেট উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারী। তিনি একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা যিনি ই-কমার্সের বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তার নেতৃত্বে আমাজন.কম ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতায় পরিণত হয়। ২০১৩ সালে তিনি দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ক্রয় করেন।

 

জীবনী

বেজস ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি নিউ মেক্সিকোতে জন্মগ্রহণ করেন। বেজোস প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান এ ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি লাভ করেন।

 

বিশ্বের অন্যতম স্বাপ্নিক উদ্যোক্তা জেফ বেজোস তালিকায় চতুর্থ। ১৯৯২ সালে উদ্ভাবনী কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন এবং ১৯৯৪ সালে গড়ে তোলেন বহুজাতিক ইলেকট্রনিক কমার্স কোম্পানি আমাজন ডটকম। আমাজনের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ চার হাজার ৮১০ কোটি ডলার ও মোট সম্পদমূল্য আট হাজার ৪০০ কোটি ডলার। ৪৮ বছর বয়সী বেজোসের প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৫৬ হাজার ২০০ কর্মী কাজ করছেন।

 

মাইক্রোসফটের বিল গেটসকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর খেতাব নিজের করে নিয়েছেন মাত্র দু’দশক আগে অনলাইনে বই বিক্রি করা সেই জেফ বেজোস। বেজোস যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)।

 

দুই বছর ধরে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর খেতাবটি নিয়ে রীতিমতো রশি টানাটানি চলছিল ২০১৩ সাল থেকে খেতাবটি ধরে রাখা বিল গেটস এবং উদীয়মান বিজনেসম্যান অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের মধ্যে।   

 

সর্বশেষ চলতি বছরের প্রথমভাগে ফোর্বস ঘোষিত শীর্ষ ধনীর তালিকাতেও শীর্ষ ধনীর খেতাব থেকে মাত্র ৫০০ কোটি (পাঁচ বিলিয়ন) ডলার দূরে ছিলেন বেজোস। কিন্তু এবার ফোর্বসের জরিপে গেটসকে টপকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীর মুকুট ছিনিয়ে নিলেন অ্যামাজনের সিইও ৫৩ বছর বয়েসী জেফ বেজোস। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৯১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বা ৭০ বিলিয়ন ইউরো। বাংলাদেশি টাকায় যা দাঁড়ায় সাত লাখ সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকা। আর বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

ফোর্বস জানায়, বৃহস্পতিবার অ্যামাজনের শেয়ার মূল্য ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় বিল গেটসের চেয়ে ৭০০ মিলিয়ন ডলার বেশি অর্থের মালিক হয়ে গেছেন বেজোস। তিনি অ্যামাজনের ১৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক। যার মূল্য ৫০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

 

ফোর্বস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে সপ্তাহের শেষ দিকে এসে অ্যামাজনের শেয়ার মূল্যের উল্লম্ফন ঘটেছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ওয়াল স্ট্রিটে লেনদেন শেষ হওয়ার পর ফোর্বস আবারও সেরা ধনীর তালিকাটি হালনাগাদ করবে।

 

বেজোসের জন্ম মেক্সিকোর আলবার্কে ১৯৬৪ সালে। ১৯৯৪ সালে জেফ বেজোসের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয়েছিল অ্যামাজনের। শুরুতে অনলাইনে বই বিক্রি করত কোম্পানিটি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা খাতে ডালপালা মেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলভিত্তিক এ কোম্পানি।

 

জেনে নেওয়া যাক জেফ বেজোস সম্পর্কে ১০টি মজার তথ্য—

 

জেফ বেজসের প্রথম চাকরি ছিল ফিটেল নামের একটি স্টার্টআপ টেলিকম প্রতিষ্ঠানে। অ্যামাজন প্রতিষ্ঠার আগে তিনি এধরনের আরও কিছু চাকরি করেছিলেন।

 

বেজোস জানিয়েছিলেন, বিশ্বের সেরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের পরিকল্পনা তিনি নিউইয়র্ক থেকে সিয়াটলে গাড়ি চালানোর সময় করেছিলেন।

 

তিনি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন একদম পছন্দ করেন না। আর এজন্য তার প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন নিষিদ্ধ। এখানে কর্মীরা চার থেকে ছয় পৃষ্ঠার মেমো আকারে তাদের প্রপোজাল দেয়।

 

একদিনের জন্য ধনী হলেও জেফ বেজোস নিয়মিত সেরা ১০০ সিইও বা প্রধান নির্বাহী তালিকায় থাকেন।

 

বেজোস সবসময় ‘টু পিৎজা রুল’ অনুসরণ করেন। অর্থাৎ নিয়ম অনুযায়ী, একটি টিমে কেবল মাত্র দুটি পিৎজা শেষ করার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তিনি বিশ্বাস করেন ছোট টিম অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে।

 

 

জেফ বেজোস বই পড়তে ভালোবাসেন এবং তিনি সবসময় তার কর্মীদের বই পড়তে উৎসাহিত করেন।

জেফ বেজোস স্পেস ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি উৎসাহী। তিনি স্পেস স্টেশনে মানুষের জন্য কলোনি তৈরির কথাও বলেন।

২০১৩ সালে জেফ বেজোস ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট কিনে নেন। তিনি বলেন, পত্রিকার সম্পাদকীয় নির্দেশনায় তিনি যুক্ত হবেন না।

২০০৩ সালে বেজোস প্রায় তার জীবন হারাতে বসেছিলেন। একটি মারাত্মক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তার মাথায় আঘাত পান। এবং ওই ঘটনার পর থেকে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন।