প্রোফাইল: সাকিব আল হাসান

প্রোফাইল: সাকিব আল হাসান

বাংলাদেশর অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসান । জার আবদান কখনো ভোলার নয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছরে পা দিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার নাম দিয়েই নতুন করে বাংলাদেশকে চিনেছে ক্রিকেট বিশ্ব। অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় তারকা হয়ে উঠেন মাগুরার এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারদের একজন হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে খেলার পাশাপাশি বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিদেশি লিগগুলোতে নিয়মিত খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে একমাত্র সাকিবেরই। সবচেয়ে বেশিদিন বিশ্বের একনম্বর অলরাউন্ডারের র‍্যাংকিং ধরে রাখার পাশাপাশি সাকিবের অর্জনের খাতায় যোগ হয়েছে বাংলাদেশের অনেক ‘প্রথম ও দ্বিতীয়’ হওয়ার খেতাব। তার মধ্যে ওয়ানডেতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৪০০০ হাজার রান এবং টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০০ রান সংগ্রহ করার গৌরব। শুধু তাই নয়, বিশ্বের দ্বিতীয় অলরাউন্ডার বাংলাদেশের সাকিব,

 

 

জন্মঃ

সাকিব আল হাসানের জন্ম ২৪শে মার্চ ১৯৮৭ সালে মাগুরা জেলায় । তার বাবা একজন ফুটবল খেলোয়ার এবং তার মা একজন গৃহিণী । দুই ভাই বোনের মধ্যে সাকিবই বড় ।

 

বিবাহ

মনে রাখার মতও একটি দিনে সাকিব বিবাহ করেন। ১২+১২+১২ মানে ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখ শিশিরের সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। বর্তমানে তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক। তার মেয়ের নাম আইলানা ।

বিবাহের দুই বছর পর। স্ত্রীর জন্ম দিনে সাকিব তার ফেসবুক পেজে লেখেন , বিশ্বের সবার কাছে আমি নাম্বার ওয়ান হতে পারি, তবে আমার কাছে সবসময় তুমিই নাম্বার ওয়ান । তিনি আরো বলেন শিশির তোমার জন্মদিনে রইলো শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ আমার পাশে ভালো এবং খারাপ সময়ে থাকার জন্য। তোমার মতো একজন শহধরমিনী পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।

 

আভিষেকঃ

২০০৬ সালের আগষ্টে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের। অভিষেক ম্যাচে সাকিব ব্যাট হাতে ৩০ রানের পাশাপাশি বল হাতে ৩৯ রান খরচায় একটি উইকেট নিয়েছিলেন। একই বছর, একই দলের বিপক্ষে নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় সাকিবের। ওই ম্যাচে ২৬ রানের পাশাপাশি একটি উইকেট পকেটে পুরেছিলেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে রঙিন পোষাকে অভিষেকের এক বছর পর ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের। টেস্টের অভিষকটা উল্লেখ্যযোগ্য হয়নি তরুণ সাকিবের। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ২৭ রান করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ১৩ ওভার হাত ঘুরালেও উইকেট শূন্য ছিলেন তিনি। অন্যদিকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট কিংবা বল কোনটাই করেননি সাকিব। সেই থেকে তাকে আর পিচনে ফিরে তাকাতে হয় নাই।

 

উল্লেখ্য যে, এক ইনিংসে ব্যাট হাতে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২১৭ রান করেন তিনি ।

 

টেস্ট ম্যাচ

রেকর্ডস:

 

সপ্তম উইকেট জুটিতে মাহমুদুল্লাহকে সাথে নিয়ে সর্বোচ্চ সংগ্রহ: ১৪৫ বনাম নিউজিল্যান্ড, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০

এক ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান: ৭/৩৬ বনাম নিউজিল্যান্ড, ১৭ অক্টোবর ২০০৮

বাংলাদেশের সেরা বোলিং গড় (কমপক্ষে ১৫টি উইকেট প্রাপ্ত বোলারদের মধ্যে) ২১ ম্যাচে ৭৫ উইকেট, ৩২.১৩ গড়ে

 

ওডিআই ম্যাচ

রেকর্ডস

 

৫ম উইকেট জুটিতে - রাকিবুল হাসানকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ জুটি বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ১২ মার্চ ২০০৮ <<< রানের কথা উল্লেখ নেই>>>

৯ম উইকেট জুটিতে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ জুটি বনাম পাকিস্তান, ১৬ এপ্রিল ২০০৭

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সেরা ব্যাটিং গড়: ৩৪.৯৮

বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি: ৫টি।

 

সাকিব যখন তরুণ খেলোয়াড়: ফুটবল পাগল পরিবারে বড় হওয়ার পরেও সাকিবের ক্রিকেট দক্ষতা ছিল অসাধারণ। তরুণ বয়সেই সাকিব ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন। এই দক্ষ খেলোয়াড়কে গ্রাম-গ্রামান্তরে খেলার জন্য ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হত। বাবার মত তাঁর এক কাজিন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলতেন। এরকমই এক ম্যাচে সাকিব এক আম্পায়ারকে অভিভূত করেছিলেন, যিনি এরপরে সাকিবকে ইসলামপুর পাড়া ক্লাব (মাগুরা ক্রিকেট লীগের একটি দল) এর সাথে অনুশীলন করার সুযোগ করে দেন। সাকিবের সৌভাগ্যের দ্বার বুঝি এ সময়ই খুলতে থাকে। সাকিব তাঁর স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও দ্রুতগতির বোলিং অব্যাহত রাখেন, সেই সাথে প্রথমবারের মত স্পিন বোলিং নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন ও সফল হন। ফলস্বরূপ, ইসলামপুর দলে খেলার সুযোগ পান এবং প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন। সত্যিকারের ক্রিকেট বল দিয়ে এটাই ছিল তাঁর প্রথম করা বল। এর আগ পর্যন্ত তিনি টেপড টেনিস বল দিয়েই খেলতেন।

সাকিব-আল-হাসান মাত্র পনের বছর বয়সেই অনূর্দ্ধ-১৯ দলে খেলার সুযোগ পান। সালটি ছিল ২০০৫, অনূর্দ্ধ-১৯ ত্রি-দেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে (অপর দুটি দেশ ছিল ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা) মাত্র ৮৬ বলে সেঞ্চুরি করে ও তিনটি উইকেট নিয়ে দলকে জেতাতে সহায়তা করেন তিনি। ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে এই অলরাউন্ডার অনূর্দ্ধ-১৯ দলের হয়ে ১৮টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। ২০.১৮ গড়ে তিনি নেন মোট ২২টি উইকেট এবং ৩৫.১৮ গড়ে মোট ৫৬৩ রান।

সাকিবের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ও অলরাউন্ডার হওয়ার গল্প:  সাকিব আল-হাসান একজন বাংলাদেশী ক্রিকেটার। ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক। আমরা আগেই জেনেছি যে, তিনি একজন বামহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার। তার খেলার মান আর ধারাবাহিকতা তাকে নিয়ে গেছে এক নতুন উচ্চতায়, হয়েছেন দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য একজন খেলোয়াড়-"দ্য ওয়ান ম্যান আর্মি"। এছাড়াও তার রয়েছে বিশ্বের সেরা অল-রাউন্ডার হওয়ার কৃতিত্ব। সাকিব ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে টেস্ট, ওডিআই ও টি-২০ প্রত্যেক ক্রিকেট সংস্করণে এক নম্বর অল=রাউন্ডার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন|তৎকালীন প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদের মন্তব্য "তরুণদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। এখনই সময় তাদের আন্তর্জাতিক লেভেলে খেলার সুযোগ করে দেয়া।" সাকিবের অলরাউন্ডার হওয়ার আরও একটি দ্বার খুলে যায়। একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় সাকিবের অভিষেক হয় ৬ই আগস্ট। তার প্রথম শিকার হন এলটন চিগুম্বুরা। ৩৯-১, এই ছিল তাঁর সেদিনকার বোলিং ফিগার। ব্যাট হাতে তিনি ৩০ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন। সেদিন ম্যাচ জেতাতে ভূমিকা রাখেন শাহরিয়ার নাফিস। ম্যাচটি ছিল সিরিজের শেষ ম্যাচ যাতে জিম্বাবুয়ে ৩-২ ব্যবধানে জয়ী হয়। একই বছর সেপ্টেম্বর মাসে সাকিব, ফরহাদ রেজা ও মেহরাব হোসেন জুনিয়র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। ফলে, বোর্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়ের সংখ্যা ২০ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৩।

একজন অল-রাউন্ডার হওয়া সত্ত্বেও অক্টোবর,২০০৮ এর নিউজিল্যান্ডের বাংলাদেশ ট্যুরের আগ পর্যন্ত সাকিবকে বোলার নয়, ব্যাটসম্যান হিসেবেই গণ্য করা হত। টেস্টে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামলেও ওয়ানডেতে কিন্তু প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যেই থাকতেন তিনি। ট্যুরের আগ দিয়ে কোচ জিমি সিডন্স জানালেন, সাকিবকে স্পেশালিস্ট বোলার হিসেবেই টেস্ট সিরিজ খেলানো হবে। আশার কথা হলো কোচকে হতাশ করেননি সাকিব। উদ্বোধনী টেস্টের প্রথম ইনিংসেই তিনি ৩৭ রান দিয়ে তুলে নেন ৭টি উইকেট। তখন পর্যন্ত কোন বাংলাদেশী বোলারের টেস্টে এটাই ছিল বেস্ট বোলিং ফিগার। বাংলাদেশ সিরিজ হারে ২-০ তে, কিন্তু সাকিব ১৭.৮০ গড়ে ১০টি উইকেট নিয়ে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হন। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জয় পায়। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে এটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম জয়।শেষ পর্যন্ত অবশ্য স্বাগতিক দল সিরিজ হারে ২-১ এ। সাকিব ৩ ম্যাচে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে মাশরাফি মুর্তজা (৭ উইকেট)'র পেছনে থেকে সিরিজে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হন।

পরের মাসেই বাংলাদেশ দল দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি-২০ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যায়। অলরাউন্ডার সাকিবের বোলিং পারফরম্যান্স এখানেও অব্যাহত থাকে। প্রথম টেস্টের প্রথম দিন সাকিব উইকেটশূন্য থাকলে মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন, বাংলাদেশের তৎকালীন সহকারী কোচ, তাকে বলে 'ফ্লাইট' দেবার পরামর্শ দেন। গুরুর উপদেশ বলে কথা। সাকিব দ্বিতীয় দিনেই পাঁচ-পাঁচটি উইকেট তুলে নেন। দ্বিতীয় টেস্টে সাকিব আবারও এক ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেন। সিরিজ শেষে সাকিবের ঝুলিতে জমা হয় ২০.৮১ গড়ে ১১টি উইকেট। সাকিবের বোলিং দেখে মুগ্ধ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক লেগ স্পিনার ক্যারি ও' কীফে তাকে 'বিশ্বের সেরা ফিঙ্গার স্পিনার' হিসেবে অভিহিত করেন। ২০০৮ এর ডিসেম্বর মাসে শ্রীলঙ্কা এদেশে দুটি টেস্ট ও একটি ত্রি-দেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্ট (অপর দলটি ছিল জিম্বাবুয়ে) খেলতে আসে। দুটো টেস্টই শ্রীলঙ্কা জিতে নেয়। সেই সাথে ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ফাইনালও। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য সাকিবের করা ৯২ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজের একমাত্র জয়ের স্বাদ এনে দেয়। আমাদের সাকিব ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।

২২ জানুয়ারী, ২০০৯ সাকিব আইসিসি'র ওডিআই অল-রাঊন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বরে উঠে আসেন।২০১১ সালে আইপিএল এর নিলামে তাকে ৪ লাখ ২৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স কিনে নেয়।

 

সাকিবের জীবনে কালো মেঘের থাবা: অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সাকিব-আল-হাসানের জীবনে দূর্যোগের কালো মেঘ নেমে আসে ২০১৪ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সিরিজের ২য় ওডিআই চলাকালীন ড্রেসিংরুমে অশালীন অঙ্গভঙ্গির কারনে তাঁকে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ ও তিন লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হয়েছে।

এছাড়া, ২০১৪ সালের জুলাইয়ে তাকে জাতীয় দল থেকে ৬ মাসের জন্য ও বাংলাদেশের বাইরের ক্লাব ক্রিকেটের জন্য ২০১৫ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাকে নিষিদ্ধ করে। জাতীয় দলের কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহার সাথে দুর্ব্যবহার, মাঠে অশোভন আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাকে এই শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান দাবি করেন। যদিও এই শাস্তি দেয়ার জন্য বোর্ডকে অনেক সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন তারকা ও সামাজিক যোগযোগের মাধ্যম এই অভিযোগের প্রতিবাদ করেন; সাকিব ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছেন বলেও অনেকে অভিযোগ করেন ।

পরবর্তীতে ২৬ই আগস্ট বিসিবির বোর্ড সভায় সাকিবের ইতিবাচক আচরণের কথা বিবেচনা করে তাঁর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কমানো হয়। সভায় সিদ্ধান্ত অনুসারে সাকিব একই বছরের ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচ খেলা শুরু করতে পারবেন। সাময়িক নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে টেস্ট সিরিজে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন করেন এবং প্রথম টেস্টে ৫৯ রানের বিনিময়ে প্রতিপক্ষের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেন। 

অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সাকিব-আল-হাসানের বৈবাহিক জীবন:

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী উম্মে আহমেদ শিশিরের সাথে ২০১২ সালের ১২ই ডিসেম্বর তারিখে সাকিব আল হাসান বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। ঢাকার হোটেল রূপসী বাংলায় তাঁদের বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তামিম ইকবাল।

নিজের স্ত্রী সম্পর্কে যা বলেছেন সাকিব-আল-হাসান: স্ত্রীর জন্মদিনে নিজের ফেসবুক পে’জে সাকিব লেখেন-‘বিশ্বের সবার কাছে আমি “নাম্বার ওয়ান” হতে পারি, তবে আমার কাছে তুমি সবসময়ই নাম্বার ওয়ান।’ তিনি আরও লেখেন-‘শিশির, তোমার জন্মদিনে রইলো শুভেচ্ছা! ধন্যবাদ আমার পাশে আমার ভালো এবং খারাপ সময় থাকবার জন্য।’ শিশিরকে পেয়ে তিনি নিজেকে একজন ভাগ্যবান মনে করেন। তাঁর কথায় ‘তোমার মত একজন সহধর্মিনীকে পেয়ে আমি আসলেও নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি! - সাকিব।’

অলরাউন্ডার ক্রিকেটার সাকিব-আল-হাসান এ দেশের গর্ব, এ দেশের অহংকার। ক্রিকেট অঙ্গনে তিনি দীর্ঘদিন থাকবেন, সেবা দিয়ে যাবেন- সে প্রত্যাশা আমাদের সকলের।

 

কীর্তিগাঁথা

 

সাকিব ২০১১ সালের পর নিজের ৩য় সেঞ্চুরি করেন সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার প্রথম ঘন্টাতেই ত্রয়োদশবারের মতো পাঁচ উইকেট তুলে নেন সাকিব। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ২য় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের চতুর্দশ পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির মাধ্যমে সাকিব সাকলাইন মুশতাক ও মাইকেল হোল্ডিংয়ের অর্জনকে পিছনে রেখে দেন। বামহাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়রের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক টেস্টে দুইবার পাঁচ উইকেট প্রাপ্তির পর সাকিবও এ তালিকায় যুক্ত হন। প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রান ও ৫/৮০ পান। পরবর্তীতে ৫/৪৪ পান দ্বিতীয় ইনিংসে। তার এ কৃতিত্বে জিম্বাবুয়ে ১৬২ রানে পরাজিত হয় ও ২-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। নাতসাই মুশাঙউইকে আউট করে সাকিব তার দশম উইকেট পূর্ণ করেন। সাকিবের সেঞ্চুরি ও দশ উইকেট প্রাপ্তির পূর্বে ১৯৮৩ সালে ফয়সালাবাদে ভারতের বিপক্ষে ইমরান খান সর্বশেষ এ কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। একমাত্র অন্য খেলোয়াড় ইয়ান বোথাম এ তালিকায় রয়েছেন। তন্মধ্যে সাকিব প্রথম স্পিনার হিসেবে। ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে ওয়াসিম আকরাম তিন টেস্টের সিরিজে সেঞ্চুরিসহ তিনবার পাঁচ উইকেট পান। তারপরই সাকিবের এ অর্জন। ধারাবাহিকভাবে পাঁচ উইকেট লাভের দিক দিয়ে সাকিবের অবস্থান পঞ্চম। তার সম্মুখে রয়েছেন সিডনি বার্নস, ক্ল্যারি গ্রিমেট, মুত্তিয়া মুরালিধরন, রিচার্ড হ্যাডলি। তবে হার্বার্ট সাটক্লিফ করেছেন মাত্র ১২ ইনিংসে।