গুনাহও সওয়াব-এ পরিণত হয় কোন কাজ করলে?

গুনাহও সওয়াব-এ পরিণত হয় কোন কাজ করলে?

তাওবা জান্নাতের সোপান। তাওবার মাধ্যমে মানুষ যাবতীয় গোনাহ থেকে আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। হাদিসে পাকে তাওবার অসংখ্য ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। যাতে মানুষ আল্লাহর বিধান থেকে গাফেল না হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর। যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার।’ (সুরা নুর : আয়াত ৩১)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে তাওবা কর।’ এভাবে অনেক আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তাঁর কাছে তাওবার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আল্লাহ তাআলা বান্দার তাওবায় অত্যাধিক আনন্দিত হন। সুতরাং প্রতিটি পাপের জন্য বান্দার তাওবা করা অপরিহার্য।

তাওবার প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর। কেননা আমি প্রতিদিন একশত বার তাওবা করি।’ (মুসলিম)

সুতরাং গোনাহ সংঘটিত হোক আর না হোক কুরআন ও সুন্নাহর বিধান পালনে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভে প্রতিদিন তাওবা করা বান্দার জন্য একান্ত আবশ্যক। কেননা তাওবা করার মধ্যে রয়েছে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ ৩টি উপকারিতা। আর তাহলো-

 

১.কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ পালন হয়। কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ পালন করলে বান্দার দুনিয়া ও পরকালে সফলতা লাভ সুনিশ্চিত। এতেই নিহিত রয়েছে পরম সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ।

 

২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন উম্মতের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ। তাঁর জীবনে কোনো গোনাহ ছিল না। তারপরও আল্লাহ তাআলা কুরআনে ঘোষণা দিয়ে তার আগের ও পরের সব গোনাহ করে দিয়েছেন। প্রিয়নবি প্রতিদিনি একশত বার তাওবা করতেন। এবং তাওবা কবুলে দোয়া করতেন।

প্রিয়নবির অনুসরণ ও তাঁর ভালবাসা আল্লাহর ভালবাসা লাভের পূর্বশর্ত। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবি! আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসতে চাও তবে আমার অনুসরণ/আনুগত্য কর; তবে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। (সুরা আল ইমরান : আয়াত ৩১)

 

৩.গোনাহ নেকিতে রূপান্তরিত হয়। তাওবার মাধ্যমে শুধু গোনাহ মাফ হয় না বরং তাওবা মানুষের গোনাহসমূহকে নেকিতে রূপান্তর করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কিন্তু যারা তাওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে। আল্লাহ তাদের গোনাহ সমূহকে নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দিবেন। (সুরা ফুরকান : আয়াত ৭০)

 

সুতরাং কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ মোতাবেক প্রতিটি মানুষেরই উচিত গোনাহ হোক আর না হোক নিয়মিত আল্লাহর দরবারে তাওবা করা। এতে জানা অজানা সব গোনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে সে গোনাহকে নেকিতে পরিণত করে দিবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় তাওবা করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নায় ঘোষিত উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।