বন্দি হিসেবে খালেদা জিয়াকে কয়েদি পোশাক পরানো হয়নি, কারণ কি?

বন্দি হিসেবে খালেদা জিয়াকে কয়েদি পোশাক পরানো হয়নি, কারণ কি?

চাইলেও কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার বাসার খাবার পৌঁছাতে পারেনি তার পরিবারের সদস্যরা। তাই তাকে এবারের বন্দিজীবনের প্রথম রাতটি কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া খাবার খেয়েই কাটাতে হচ্ছে। কারাগারে প্রথম রাতে সাধারণ কয়েদির মতোই খাবার পেলেন খালেদা জিয়া। আর তার সেই খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, মাছ ও সবজি । তার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগত পরিচারিকাকে তার সঙ্গে রাখার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

 

কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারের মূল ফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে রাখা হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপারের ওই অফিস কক্ষে একটি খাট, টেবিল, চেয়ার, টিভি ও দুটি ফ্যান রয়েছে। তিনি বলেন, তার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাকে সেবা-শুশ্রূষা করতে একজন সেবিকা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

 

ওই সেবিকা সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে থাকবেন। এছাড়া তার চাহিদা অনুযায়ী একটি জাতীয় দৈনিক সরবরাহ করা হবে। ভিআইপিবন্দি ও জেল কোড অনুযায়ী খালেদা জিয়া সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

 

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বন্দি হিসেবে কয়েদি পোশাক পরানো হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারা অধিদফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দিন কয়েদি পোশাক পরানো হয় না। দ্বিতীয় দিন থেকে পরানোর নিয়ম রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। নিরাপত্তার কারণে তার কক্ষ নম্বরও জানানো হয়নি।

 

এদিকে ব্যক্তিগত পরিচারিকা ফাতেমাকে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান এ অনুমতি দেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, খালেদা জিয়ার পরিচারিকা ফাতেমাকে তার সঙ্গে রাখার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৯ জুন। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের লালদালান খ্যাত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৬ হাজার ৪০০ বন্দিকে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ার রাজেন্দ্রপুরের নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এর মাধ্যমে ২২৮ বছরের পুরনো কারাগার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কেউ কখনো কল্পনাও করেননি কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আর কোনোদিন এ কারাগারে ফের বন্দিজীবন কাটাতে হবে। তবে দুই বছর ৪ মাস ১০ দিন পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে এই পরিত্যক্ত কারাগারে রাত কাটাবেন খালেদা জিয়া।